শবে বরাতের আমল সম্পর্কে জেনে নিন

শবে বরাতের আমল সম্পর্কে জেনে নিন

নিসফা শাবানের রাতের দোয়া আল্লাহ তাআলা কবুল করেন। তাই বেশি বেশি দোয়া করা উত্তম। হাদিসে এসেছে- ‘হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, পাঁচটি রাত এমন আছে, যে রাতে বান্দার কোনো দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না। তার মধ্যে একটি হলো শবে বরাত। সুতরাং শবে বরাতে আমল সম্পর্কে জেনে নিন।

শবে বরাতের হাদিস শবে বরাতের রোজা কয়টি শবে বরাত কি শবে বরাতের ফজিলত আল কাউসার শবে বরাত কবে ২০২২ শবে বরাতের রোজা কয়টি ২০২২ শবে বরাতের রোজা ২০২২ শবে মেরাজের আমল ও ফজিলত.jpg


শবে বরাতে আমল কি কি? 

হাদিসের আলোকে এ রাতের আমল হলো, আল্লাহর কাছে তাওবা-ইস্তিগফার করা। অনাড়ম্বর ও স্বাভাবিকভাবে হলে কবর জিয়ারত করা। অনির্ধারিতভাবে নফল ইবাদত করা। পরদিন রোজা রাখা।


শবেবরাতের প্রথম কাজ হলো, বিগত জীবনের সকল ত্রুটি-বিচ্যুতি ও গোনাহ্ থেকে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে ক্ষমা চাওয়া।  এবং ভবিষ্যতে গোনাহ না করার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া। এরপর রাত ঘন হয়ে আসলে যতদূর মনে পড়ে কাজা নামাজ আদায় করে নেয়া। দিন তারিখ মনে থাকলে অনুমান করে কাজা নামাজ আদায় করে নেয়া, নফল নামাজ পারতপক্ষে বেশি বেশি পড়া। মধ্যরাত হলে তাহাজ্জুতের নামাজ অথবা সালাতুস তাসবিহ আদায় করে নেয়া। 


আর আগামীকাল ১৫ তারিখের রোজা আদায় করার ব্যাপারে হাদিসে এসেছে। অনেকে দুটি রোজা পালন করেন। আসলে দুটি রোজা হলো আশুরার জন্য, শবেবরাতের জন্য নয়।  তবে নফলের নিয়তে রোজা রাখলে কোনো সমস্যা নেই।  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাসে রমজানের স্মরণে অধিক রোজা আদায় করতেন বলে হাদিসে পাওয়া যায়। 


এ রাতে কোরআন তেলাওয়াত করারও বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। কোরআন তেলাওয়াতের বরকত অনেক বেশি। আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা এবং তার মহব্বতের অধিকারী হওয়ার অন্যতম উপায় হলো কোরআন তেলাওয়াত করা।  যতটুকু পারা যায় তেলাওয়াত করা। তেলাওয়াত না পারলে কোনো সুরা জানা থাকলে সেটাই পড়া।  


সময় সুযোগে বরাতের রাতে জিকির এবং তাসবিহ পাঠ করাও উত্তম কাজ।  এর দ্বারা একদিকে আল্লাহ ও তার রাসূলের সঙ্গে বান্দার গভীর সম্পর্ক স্থাপন হয়। অন্যদিকে অন্তরেও প্রভূত শান্তি লাভ হয়। হাদিসে আছে, যে কোনো আমল ও দোয়ার পূর্বে  ‍দরুদ পাঠ করলে তা কবুল হয়ে যায়।  আরেক হাদিস মতে, একবার দরুদ পাঠ করলে কমপক্ষে দশটি রহমত নাজিল হয়।  আজকের রাত  দরুদ ও জিকিরের উপযুক্ত সময়। কাউকে কষ্ট না দিয়ে কারোর আমলের ক্ষতি না করে কমপক্ষে ১০০বার দুরুদ শরিফ এবং এক হাজার বার যে কোনো তাসবিহ অথবা আল্লাহর জিকির করা। 


এ রাতের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো, কবর জিয়ারত করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বরাতের রাতে জান্নাতুল বাকিতে গিয়ে কবর জিয়ারত করতেন। এই কবর জিয়ারতের মাধ্যমে মানুষের মনে পরকালীন ভাবনা আসবে এবং পরকালের প্রস্তুতি নিতে মন উদগ্রীব হবে।  


সবশেষে আল্লাহর কাছে সমর্পিত হওয়া। আল্লাহর কাছে সিরাতে মুস্তাকিমের ওপর চলা ও ঈমানের ওপর মৃত্যুর জন্য দোয়া করা। রিজিক ইত্যাদি সম্পর্কে আজ রাতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলেও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। তবে রিজিকের প্রশস্ততা নির্ভর করে হালাল হারামের বিধি-নিষেধের ওপর।  হারামকে বর্জন করে হালাল তরিকায় উপার্জনকে বিশেষ ইবাদত এবং জান্নাতে যাওয়ার উপায় হিসেবেও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।  তাই এ রাতে হালাল উপার্জনের জন্য দোয়া করারও বিশেষ ফজিলত আছে। 


এ পবিত্র রাতের মাহাত্ম্য পূর্ণভাবে পেতে চাইলে আগে থেকেই দেহমন পবিত্র করে নিতে হবে। পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সবার হক আদায় করে দিতে হবে। কারো সঙ্গে কোনো অন্যায় করে থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। আর আল্লাহকে পেতে হলে সারা বছরই নামাজ-রোজা ইবাদত-বন্দেগি করে আল্লাহর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। শবে বরাতের ইবাদত হলো নফল ইবাদত। প্রতিদিনের ফরজ ইবাদত যথাযথভাবে পালন করার পরই শবে বরাতের ইবাদতের সওয়াবের আশা করা যায়।


রমজানের আমল সমূহ জেনে নিন

*

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post